
আজ শনিবার (১২ এপ্রিল ২০২৫) রাজধানী ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মার্চ ফর গাযা’ শীর্ষক এক বিশাল গণসমাবেশ। ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং গাজাবাসীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে এ কর্মসূচির আয়োজন করে প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ।
গাজা সংকটের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ

সমাবেশে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ ঢাকায় জড়ো হতে শুরু করে। ব্যানার, ফেস্টুন, ফিলিস্তিনি পতাকা এবং প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড হাতে অংশগ্রহণকারীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করেন। মিছিলগুলো ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও পয়েন্ট থেকে উদ্যানে এসে মিলিত হয়।
নির্ধারিত রুটে শান্তিপূর্ণ মিছিল
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের জন্য পাঁচটি নির্ধারিত রুট নির্ধারণ করে আয়োজকরা:
• বাংলামোটর থেকে শাহবাগ হয়ে রমনা গেট
• কাকরাইল মোড় থেকে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট গেট
•জিরো পয়েন্ট ও বকশীবাজার থেকে দোয়েল চত্বর হয়ে টিএসসি গেট
• নীলক্ষেত মোড় থেকে ভিসি চত্বর হয়ে টিএসসি গেট

এছাড়াও, ঢাকার বাইরের জেলাগুলো থেকে আসা মিছিলগুলো রামপুরা, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, গাবতলী এবং উত্তরা থেকে শুরু হয়।
নেতৃবৃন্দের বক্তব্য ও বার্তা
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ, এবং প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্টের মুখপাত্র মাওলানা মাহফুজুল হক।
তারা গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানকে ‘মানবতা বিরোধী অপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়কে অবিলম্বে এই বর্বরতা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
লাখো মানুষের ঢল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

আয়োজকদের দাবি, সমাবেশে সারা দেশ থেকে প্রায় ৫ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। শহরের প্রবেশপথে বসানো হয় নিরাপত্তা চেকপোস্ট, আর সমাবেশস্থলের আশপাশে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব সদস্য।
সন্ধ্যার আগেই শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা “ফ্রি প্যালেস্টাইন”, “স্টপ জেনোসাইড ইন গাজা” এবং “গাজা তুমি একা নও” স্লোগানে মুখরিত করেন রাজধানীর রাজপথ।
শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ সমাপ্তি
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ
সমাবেশের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে— গাজা সংকটে তারা নীরব নয়। মানবতার পক্ষে দাঁড়ানোই এই সমাবেশের মূল মর্মবাণী।